শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৩৮ অপরাহ্ন

মসজিদে পাশাপাশি দুই ইমামের দুই জামাত

মসজিদে পাশাপাশি দুই ইমামের দুই জামাত

স্বদেশ ডেস্ক;

তাবলীগ জামায়াতের দুই গ্রুপের (মাওলানা সা’দ ও মাওলানা জোবায়ের গ্রুপ) দ্বন্দ্বে রাজশাহী মহানগরীর উপশহর এলাকার মারকাজ জামে মসজিদে একই সঙ্গে দুই ইমামের পেছনে মাগরিবের নামাজের আলাদা জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ মঙ্গলবার ওই মসজিদের ঈমাম মাওলানা জাহিদের (জোবায়ের গ্রুপ) পেছনে নামাজ পড়া ও না পড়াকে কেন্দ্র করে মসজিদে বিবাদ হয়।

তাবলীগ জামায়াতের মুসল্লিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দীর্ঘ ২০ বছর ধরে রাজশাহীর মারকাজ মসজিদে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়াচ্ছেন জোবায়ের গ্রুপের অনুসারী হিসেবে পরিচিত মাওলানা জাহিদ। কিন্তু মাওলানা জোবায়ের গ্রুপ ও মাওলানা সা’দ গ্রুপের মুরব্বীদের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে আজ মঙ্গলবার মসজিদের একপাশে পূর্বের ইমাম মাওলানা জাহিদ ও অপর পাশে মাওলানা মুফতি নজরুল ইসলামের (মাওলানা সা’দ পন্থী) নেতৃত্বে একই সময়ে মাগরিবের নামাজ আদায় করা হয়।

রাজশাহীর তাবলীগ জামায়াত সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে সপ্তাহের চারদিন মাওলানা সা’দ গ্রুপের অনুসারীরা মসজিদে তাবলীগ জামায়াত নিয়ে আলোচনা ও আমল করে এবং মাওলানা জোবায়ের গ্রুপের অনুসারীরা সপ্তাহের বাকি তিন দিন ইমান ও আমল নিয়ে আলোচনা করে আসছিলেন।

মাওলানা সা’দ গ্রুপের অনুসারীদের দাবি, মারকাজ মসজিদটি মূলত মাওলানা সা’দ গ্রুপের অনুসারীদের। ২০ বছর ধরে মসজিদ সংলগ্ন মাদ্রাসার হুজুর মাওলানা জাহিদ (জোবায়ের গ্রুপের অনুসারী) নামাজ আদায় করে আসছেন। যেহেতু মসজিদের কাগজপত্র সা’দ গ্রুপের অনুসারীদের তাই ইমামও থাকবেন সেই গ্রুপেরই। এ জন্য নতুন ইমামের নেতৃত্বে তারা মাগরিবের নামাজ আদায় করেছেন।

তবে জোবায়ের গ্রুপের অনুসারীদের দাবি, সা’দ গ্রুপ তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগ করে আসছে। এই গ্রুপের একজন বলেন, ‘সা’দ গ্রুপ আমাদের বিরুদ্ধে প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে আমরা নাকি মসজিদ সংলগ্ন মাদ্রাসাটি ধ্বংসের ষড়যন্ত্র করছি। অথচ মসজিদ-মাদ্রাসা আমাদের তত্ত্বাবধানে এবং কাগজপত্র আমাদেরই রয়েছে। এর আগেও এটি নিয়ে সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ বিষয়টি মীমাংসার জন্য দুই গ্রুপকে ডেকেছিলেন। কিন্তু আমরা গেলেও ওই গ্রুপের কেউ যায়নি।’

এদিকে, তাবলীগ জামায়াতের এমন বিবাদমান পরিস্থিতির কারণে সাধারণ মুসল্লিরা পড়েছেন বিপাকে। আব্দুর রহমান নামে এক মুসল্লি বলেন, ‘মাগরিবের নামাজ আদায় করতে এসে দেখি মসজিদের ভেতরে দুই ইমাম আলাদাভাবে নামাজ পড়াচ্ছেন। এখন আমি কোনো গ্রুপে গিয়ে নামাজ পড়ব তা নিয়ে দ্বিধায় পড়ে যাই। শেষ অবধি একটি গ্রুপে নামাজ আদায় করে মসজিদ থেকে বের হলাম। নামাজ নিয়ে অন্ততপক্ষে এমন বিবাদ আমাদের কারও প্রত্যাশিত না।’

এ বিষয়ে নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিবারণ চন্দ্র বর্মন বলেন, ‘ঘটনাস্থলে গিয়ে দুই গ্রুপের সঙ্গে আমরা কথা বলার চেষ্টা করেছি। তারা বলছেন, সা’দ গ্রুপের ১০ জন মুরব্বির সবাই ঢাকায় অবস্থান করছেন। এ জন্য এই বিষয় নিয়ে এক পক্ষ বসতে চাচ্ছে না। ওই মসজিদটি জেলা প্রশাসনের অধীনে। তাই জেলা প্রশাসনের সঙ্গেও তাদেরকে আলোচনা করতে বলা হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বর্তমানে ঘটনাস্থলে অবস্থান করছি। অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে মসজিদ চত্ত্বরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তবে বিষয়টি মিমাংসা করার চেষ্টা চলছে।’

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877